মৃত্যুর পর অন্যরা আমাদের কতটা মনে রাখবে এই নিয়ে মানুষের একটা সাধারণ চিন্তা কমবেশি হয়ত উদয় হয়। ভারতের মোহনলাল নিজেও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। অবশ্য মৃত্যুর পর মানুষের প্রতিক্রিয়া ও ভালোবাসা বুঝতে চিন্তাভাবনাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। আয়োজন করেন নিজের শেষকৃত্যানুষ্ঠান। মৃত সেজে খাটিয়ায় শুয়েও থাকেন।
বিহারের গয়া জেলার গুরারু ব্লকের কোনচি গ্রামের বাসিন্দা ৭৪ বছর বয়সি মোহন লাল বিমানবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা। নিজের খেয়াল পূরণে ফুল ও কাফনের কাপড়ে মোড়া খাটিয়ায় মৃতের মতো শুয়ে থাকেন। এরপর শোকসংগীত বাজিয়ে তাকে বহন করে শ্মশানঘাটে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করান। পুরো প্রক্রিয়ায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেন।
তার মারা যাওয়ার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়তেই শত শত গ্রামবাসী ওই শবযাত্রায় যোগ দেন। শ্মশানঘাটে পৌঁছে চিতা জ্বালানোর মঞ্চে তুলতেই মোহনলাল হঠাৎ উঠে বসেন। মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় উপস্থিত জনতা। পরে প্রতীকীভাবে একটি কাকতাড়ুয়া দাহ করা হয় এবং সবার জন্য ভোজের আয়োজন করা হয়।
মোহনলাল বলেন, মানুষ মৃত্যুর পর খাটিয়া কাঁধে তোলে, কিন্তু আমি চেয়েছি জীবিত অবস্থায় সেটা দেখতে—দেখতে চেয়েছি মানুষ আমাকে কতটা সম্মান ও ভালোবাসে।
ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসীদের অনেকেই মোহনলালের সমাজসেবামূলক কাজের প্রশংসা করেছেন। বর্ষায় চিতা জ্বালাতে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ দেখে সম্প্রতি তিনি নিজ খরচে গ্রামের জন্য একটি শ্মশানঘাট নির্মাণ করেন।
মোহনলালের স্ত্রী জীবনজ্যোতি ১৪ বছর আগে মারা গেছেন। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
গত বছর রাজস্থানে ঘটেছিল আরেক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এক ব্যক্তি শ্মশানে চিতায় শোয়ানোর আগ মুহূর্তে হঠাৎ জেগে ওঠেন। ঝুনঝুনু জেলার এক সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা মূক-বধির ২৫ বছর বয়সি রোহিতাশকে মৃত ঘোষণা করে মর্গে পাঠান। সেখানে দু ঘণ্টা তাকে বরফের মধ্যে রাখা হয়।
পরে তার দেহ চিতায় তোলার আগে আচমকা নড়াচড়া শুরু হলে সবাই হতবাক হয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রথম চিকিৎসককে পরে বহিষ্কার করা হয়।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
Sangbad365 Admin 














