এশিয়া কাপের উত্তেজনায় ভরপুর ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে দারুণ জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে জীবন্ত রাখল সুপার ফোরের স্বপ্ন।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৫৪ রান। জবাবে আফগানিস্তান লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে অলআউট হয়ে থেমে যায় ১৪৬ রানে।
বিদেশের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার পাওয়া এই জয়ের সুবাদে ৩ ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট ও -০.২৭০ রান রেট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। এখন শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বড় ব্যবধানে হেরে গেলে কিংবা আফগানিস্তান পরাজিত হলেই সুপার ফোরে জায়গা করে নেবে টাইগাররা।
এদিন বল হাতে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। এরপর ১৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে আরো কোণঠাসা হয়ে পড়ে তারা। রহমানুল্লাহ গুরবাজ, গুলবাদিন নায়েব, মোহাম্মদ নবী, আজমতউল্লাহ ওমরজাই কিংবা রশিদ খান- সবার চেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে তা হয়ে ওঠেনি যথেষ্ট।
গুরবাজ ২ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন সর্বোচ্চ ৩৫ রানের ইনিংস। আজমতউল্লাহ ঝড় তোলেন ৩ ছক্কা ও ১ চার মেরে ৩০ রানে। রশিদ খানও ছোট ঝলক দেখান, ২০ রান করেন ২ চার ও ১ ছক্কায়। গুলবাদিন ১৬ ও নবী যোগ করেন ১৫ রান।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন সবথেকে কার্যকর। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ দুর্দান্ত স্পেল করে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট, যার মধ্যে ছিল একটি মেডেন। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। আর তাসকিন আহমেদও সমান সাফল্য পান ৩৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে।
তার আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে সাইফ হাসান ও তানজিদ হাসান তামিম ঝড় তোলেন। মাত্র ৬.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে উঠে যায় ৬৩ রান। একাদশে সুযোগ পাওয়া সাইফ ২৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর লিটন দাস হতাশ করেন। তিনি কেবল ৯ রান করেই বিদায় নেন।
তবে তানজিদ ছিলেন আলাদা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন ফিফটি। যদিও মাইলফলক স্পর্শ করার পরই বিদায় নিতে হয় তাকে। ৩১ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ঝলমলে ৫২ রান।
মাঝের দিকে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ১১ বলে ২ চারে ১১ রান ও তাওহীদ হৃদয় ২০ বলে ১ চার–১ ছক্কায় ২৬ রান যোগ করেন। শেষদিকে জাকের আলী ও নুরুল হাসান সোহান অপরাজিত থেকে দলকে নিয়ে যান লড়াইযোগ্য সংগ্রহে। সোহান ৬ বলে ২ চার মেরে ১২ রান ও জাকের ১৩ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।
আফগানিস্তানের বোলাররাও লড়েছেন প্রাণপণ। নুর আহমদ ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। রশিদ খান ৪ ওভারে ২৬ রানে শিকার করেন ২ উইকেট। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ৩ ওভারে ১৯ রানে নেন ১ উইকেট।
বল হাতে ভেল্কি দেখিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাংলাদেশের নাসুম আহমেদ।
এই জয়ে বাংলাদেশ শুধু একটি ম্যাচই জেতেনি, বরং আশা বাঁচিয়ে রেখেছে কোটি ভক্তের হৃদয়ে। সুপার ফোরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এখন টাইগারদের চোখ স্বপ্নপূরণের পথে।