ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘বরিশালের ভাইজান’ খ্যাত হাফিজুর রহমান ইকবাল (৫৭)। দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা ইকবাল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বরিশালের উজিরপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের কেশবকাঠি গ্রামের বাসিন্দা রফিজ উদ্দিন মৃধার ছেলে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস সালাম।
তিনি জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও উজিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা দুটি মামলা আছে। এসব মামলায় তিনি পলাতক আসামি।
দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ওসি মো. মমতাজুল হক মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় হাফিজুর রহমান ও মাহমুদুল আজাদ নামের দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও নিজ থানায় দুটি মামলা আছে।
ওসি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে, তারা দুজনই গ্রেপ্তার এড়াতে নিরাপদ রুট মনে করে বিরামপুরের কাটলা সীমান্তপথে চোরাকারবারিদের সহযোগিতায় ভারতে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ওসি বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হবে।
একই সময়ে গ্রেপ্তার করা অপর ব্যক্তি মাহমুদুল আজাদ ওরফে রিপন (৪৮) বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর কলোনি মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ভেলারপাড়া গ্রামে পাকা সড়কের একটি কালভার্টের কাছে দুজন ব্যক্তিকে ইজিবাইকে যেতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে যুবকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ব্যক্তি কখনো বলেন, তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন; আবার কখনো জানান, জরুরি কাজে এলাকায় এসেছেন। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয় যুবকরা বিরামপুর থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে।
হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে বরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খানকে অপহরণ করে গুমের অভিযোগ রয়েছে।
হুমায়ুন কবির খানের ভাই মঞ্জু খান অভিযোগ করেছেন, ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর হাফিজুর রহমান ইকবালের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়া থেকে হুমায়ুন কবিরকে অপহরণ করে। এখন পর্যন্ত হুমায়ুন কবিরের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগসহ মামলা দায়ের করায় একাধিকবার প্রকাশ্যে মামলার বাদী মঞ্জু খানের ওপর হামলা চালিয়েছেন হাফিজুর রহমান ইকবাল ও তার ক্যাডার বাহিনী।
মঞ্জু খান জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে হারতা এলাকায় গণডাকাতিসহ পতিত সরকারের সময় উজিরপুরে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগ আছে।
ভুক্তভোগীরা প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করে হাফিজুর রহমান ইকবালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
Sangbad365 Admin 















