শুল্কের বিষয়গুলো যত পরিষ্কার হচ্ছে, মার্কিন অর্থনীতিতে তার প্রভাবও বোঝা যাচ্ছে। চলতি বছরের বসন্তের শেষ দিকে হঠাৎ রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছিল। উচ্চ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই অনেক প্রতিষ্ঠান দ্রুত পণ্য পাঠিয়ে দেয়। ফলে সে সময় অর্থনীতি অস্থায়ীভাবে চাঙা হয়। অর্থনীতিবিদদের মতে, বছরের বাকি সময় সেই গতি আর ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক ছিল ২ শতাংশ। এখন তা বেড়ে হলো ১৭ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রাজস্ব আয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ছে, যদিও এটিই ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতির অন্যতম লক্ষ্য। শুধু আমদানি শুল্ক থেকেই এ পর্যন্ত ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার আদায় হয়েছে, সামগ্রিক রাজস্বের যা প্রায় ৫ শতাংশ। আগের বছরগুলোতে যা প্রায় ২ শতাংশ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট আশা করছেন, এ বছর শেষে শুল্ক রাজস্ব দাঁড়াবে ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ডলার। সেই তুলনায় দেশটির আয়কর থেকে আসে প্রায় ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন বা আড়াই লাখ কোটি ডলার।
এই পাল্টা শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ক্রেতার ওপর বেশি চাপ পড়েছে, যদিও সব দামের বাড়তি বোঝা ক্রেতাদের ঘাড়ে পড়েনি। ইউনিলিভার ও অ্যাডিডাসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, মূল্যবৃদ্ধি আসছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সুদহার হ্রাসের সম্ভাবনা কমে যাবে। ভোক্তারাও খরচ কমিয়ে দিতে পারেন।
এটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দাম কমাবেন। তবে এসব কর্মকাণ্ড উল্টো যেন দাম বাড়ানোর পদক্ষেপ। তাই যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নআয়ের মানুষের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য ‘রিবেট চেক’ চালু করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। এটি বাস্তবায়ন কঠিন। এর জন্য কংগ্রেসের অনুমোদনও লাগবে।
এ চিন্তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, শুধু রাজস্ব বৃদ্ধির কথা বলে জনগণকে সন্তুষ্ট রাখা কঠিন। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এটি রিপাবলিকান দলের জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি।