০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘হান্দালা’ আটক করেছে ইসরায়েল

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ০৯:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • ১৬০৫৬ Time View

গাজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজ ‘হানদালা’। ছিলেন ২১ জন আরোহী। শনিবার রাতে গন্তব্যের প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে জাহাজটিকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

এক ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে দেখা যায়, সশস্ত্র ‘ইসরায়েলি’ সেনারা জাহাজে উঠে পড়ছে। ওই সময় জাহাজের ডেকে থাকা সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে দুহাত উঁচু করে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিল। এর মধ্যে সেনাদের একজন ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেয় এবং কিছুক্ষণ পরেই লাইভ সম্প্রচারটি বন্ধ হয়ে যায়।

লাইভ স্ট্রিম বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই মিশনের আয়োজক ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় সহায়তা পাঠানোর প্রচেষ্টায় থাকা হানডালা নৌযানটিকে ইসরাইলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জোরপূর্বক আটক করেছে। প্যালেস্টাইনের জলসীমার বাইরে ইসরায়েলি বাহিনী এই অভিযানটি চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মের বিরুদ্ধ।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘হান্দালা’ নামের জাহাজটিতে শিশুখাদ্য, ডায়াপার, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছিল, যা গাজার অবরুদ্ধ মানুষের জীবন বাঁচাতে পাঠানো হচ্ছিল। তাদের ভাষ্য, ইসরায়েলি বাহিনী শুধু ত্রাণসামগ্রী জব্দ করেই থামেনি, বরং জাহাজে থাকা আরোহীদেরও তুলে নিয়ে গেছে। জাহাজটিতে ১০টি দেশের ২১ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৯ জন আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মী এবং ২ জন আল–জাজিরার সাংবাদিক।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে জানায়, ইসরায়েলি নৌবাহিনী অবৈধভাবে গাজার উপকূলীয় জলসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। জাহাজটিকে নিরাপদে ইসরায়েলের উপকূলে আনা হচ্ছে। সব যাত্রী নিরাপদে রয়েছেন। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে তারা এটিকে ‘জলদস্যুতা’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর নিন্দা জানাতে আহ্বান জানিয়েছে। হামাস বলেছে, এই ধরনের হামলার জন্য আমরা নেতানিয়াহু সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী করছি। গাজায় অবরোধ না ওঠা পর্যন্ত ত্রাণবাহী জাহাজের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

অধিকারকর্মীদের সাহসিকতার প্রশংসা করে হামাস বলেছে, ইহুদিবাদীদের হুমকির মধ্যেও তাদের বার্তা গাজাবাসী ও সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে গেছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জাতিসংঘ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের নানা দেশের সরকার গাজায় ইসরায়েলের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সাড়ি বেড়েই চলেছে। ত্রাণ সংগ্রহ করার সময় এখন পর্যন্ত ১,০০০-এর বেশি মানুষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও মার্কিন ভাড়াটে বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।

এদিকে রবিবার গাজার উত্তরাঞ্চলে স্বল্প পরিমাণে ত্রাণ বিমান থেকে ফেলে লোক দেখানো সহায়তা প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে ইসরায়েল। তবে এই ধরনের ত্রাণ বিতরণকে অকার্যকর ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘হান্দালা’ আটক করেছে ইসরায়েল

সময়ঃ ০৯:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

গাজার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজ ‘হানদালা’। ছিলেন ২১ জন আরোহী। শনিবার রাতে গন্তব্যের প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে জাহাজটিকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

এক ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে দেখা যায়, সশস্ত্র ‘ইসরায়েলি’ সেনারা জাহাজে উঠে পড়ছে। ওই সময় জাহাজের ডেকে থাকা সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে দুহাত উঁচু করে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিল। এর মধ্যে সেনাদের একজন ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেয় এবং কিছুক্ষণ পরেই লাইভ সম্প্রচারটি বন্ধ হয়ে যায়।

লাইভ স্ট্রিম বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই মিশনের আয়োজক ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় সহায়তা পাঠানোর প্রচেষ্টায় থাকা হানডালা নৌযানটিকে ইসরাইলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জোরপূর্বক আটক করেছে। প্যালেস্টাইনের জলসীমার বাইরে ইসরায়েলি বাহিনী এই অভিযানটি চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মের বিরুদ্ধ।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘হান্দালা’ নামের জাহাজটিতে শিশুখাদ্য, ডায়াপার, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছিল, যা গাজার অবরুদ্ধ মানুষের জীবন বাঁচাতে পাঠানো হচ্ছিল। তাদের ভাষ্য, ইসরায়েলি বাহিনী শুধু ত্রাণসামগ্রী জব্দ করেই থামেনি, বরং জাহাজে থাকা আরোহীদেরও তুলে নিয়ে গেছে। জাহাজটিতে ১০টি দেশের ২১ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৯ জন আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মী এবং ২ জন আল–জাজিরার সাংবাদিক।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে জানায়, ইসরায়েলি নৌবাহিনী অবৈধভাবে গাজার উপকূলীয় জলসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। জাহাজটিকে নিরাপদে ইসরায়েলের উপকূলে আনা হচ্ছে। সব যাত্রী নিরাপদে রয়েছেন। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। এক বিবৃতিতে তারা এটিকে ‘জলদস্যুতা’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর নিন্দা জানাতে আহ্বান জানিয়েছে। হামাস বলেছে, এই ধরনের হামলার জন্য আমরা নেতানিয়াহু সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী করছি। গাজায় অবরোধ না ওঠা পর্যন্ত ত্রাণবাহী জাহাজের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

অধিকারকর্মীদের সাহসিকতার প্রশংসা করে হামাস বলেছে, ইহুদিবাদীদের হুমকির মধ্যেও তাদের বার্তা গাজাবাসী ও সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে গেছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জাতিসংঘ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের নানা দেশের সরকার গাজায় ইসরায়েলের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সাড়ি বেড়েই চলেছে। ত্রাণ সংগ্রহ করার সময় এখন পর্যন্ত ১,০০০-এর বেশি মানুষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও মার্কিন ভাড়াটে বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।

এদিকে রবিবার গাজার উত্তরাঞ্চলে স্বল্প পরিমাণে ত্রাণ বিমান থেকে ফেলে লোক দেখানো সহায়তা প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে ইসরায়েল। তবে এই ধরনের ত্রাণ বিতরণকে অকার্যকর ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।