[বেদুইনরা পানি আর ঘাসের খোঁজে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এক সময়ে, দুটি পরিবার ছিল, যাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল। বেদুইনরা এ ধরনের সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক, খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখে।
এই দুটি পরিবারের একটির নাম ছিল আল-মাহাদি। এই পরিবারের পিতার তিন কন্যা ছিল, আর তার প্রতিবেশীর তিন পুত্র। সেই তিন মেয়ের একজন ছিল খুবই সুন্দরী এবং প্রতিবেশীর ছেলেদের একজন তার প্রেমে পড়েছিল এবং তার ভালোবাসা পাওয়ার চেষ্টা করছিল। যদিও এটা প্রচলিত রীতিনীতির মধ্যে পড়ত না, তবু সে ভালোবাসার সুযোগ নিতে চেয়েছিল।
মেয়েটি নিজের মাকে সবকিছু জানায়, কারণ সে চায়নি তার পরিবার লজ্জিত হোক। মা বিষয়টি জানায় আল-মাহাদিকে। আল-মাহাদি পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পারেন, এবং প্রতিবেশীর সঙ্গে ‘সেজাহ’ নামক একধরনের খেলা খেলার অজুহাতে তার তাঁবুতে যান। খেলার সময় তিনি প্রতিবেশীকে বলেন, ‘তুমি চলে যাও, নয়তো আমি চলে যাব।’
এই কথা শুনে প্রতিবেশী বুঝলেন খারাপ কিছু একটা ঘটেছে, যদিও বিস্তারিত জানতেন না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলেন—তাঁবু ও পশুপাল নিয়ে রাতের আঁধারে অন্য স্থানে চলে যাবেন।
পরদিন সকালে আল-মাহাদি জানতে পারেন যে প্রতিবেশী চলে গেছেন।
নতুন জায়গায় পৌঁছানোর পর প্রতিবেশী একে একে তার তিন ছেলেকে ডেকে বলেন: ‘আমার প্রতিবেশীর সঙ্গে সমস্যার কারণ কী? সত্যি কথা বলো।’
যে ছেলে আল-মাহাদির মেয়েকে ভালোবাসত, সে স্বীকার করে নেয়, ‘হে পিতা, আমি তার এক মেয়েকে ভালোবাসি।’
বিষয়টি শুনে বাবা ক্রুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘আজ থেকে আমি আর তোমার বাবা নই; তুমি আর আমার ছেলে নও। তুমি আমাদের সম্মান ধূলিসাৎ করেছ। তুমি এখানে আর থাকতে পারবে না। এখনই চলে যাও।’
ছেলেটি বাধ্য হয়ে পালিয়ে যায়।
এরপর আল-মাহাদি জানতে পারেন, প্রতিবেশী তার ছেলেকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন—এটা তিনি বুঝলেন, তার প্রতি একধরনের গভীর সম্মান দেখানো হয়েছে।
কারণ, প্রতিবেশী তাদের সম্মান ও পারিবারিক সম্পর্ককে এতটা গুরুত্ব দিয়েছেন এবং ছেলেটি ও মেয়েটি একে অপরকে ভালোবাসত—এই কথা বিবেচনা করে, আল-মাহাদি শেষ পর্যন্ত তার মেয়েকে সেই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি আরও গভীর সম্মান প্রদর্শন করেন তার প্রতিবেশীর প্রতি—যিনি আগেই তাকে সম্মান দেখিয়েছিলেন।
এই মহৎ সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবেশী একটি কবিতা রচনা করেন, যাতে বলা হয়—]
আমি ধৈর্য ধরেছি, কিন্তু আল-মাহাদি আমার থেকেও বেশি ধৈর্যশীল,
কারণ তিনি আমার পুত্রকে বহু বছরের গ্লানির হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
তিনি যখন বুঝলেন যে তার প্রতিবেশীর ছেলের সঙ্গে মেয়ের অনুচিত সম্পর্ক হচ্ছে,
তখন তিনি তার স্ত্রীদেরও বলেছিলেন, যেন কেউ এটা নিয়ে আলোচনা না করে।
যদি পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির জল উপত্যকায় নামে,
তাহলে সেই সমৃদ্ধি তোমাদের, আমাদের নয়।
তোমাদেরই জল, আমাদের নয়।
বৃষ্টির পর সমতলভূমি ঘাসে ভরে যায়, তোমাদের উটরা সেখানে চরে বেড়াতে পারে,
কেউ তাদের ধরবে না—কারণ তুমি একজন শেখের (নেতার) মতো শক্তিশালী।
সবাই জানে, তুমি একজন সম্মানিত শেখের মতো; তোমার সুনাম অতুলনীয়,
এবং আমাদের পরিবার বহু বছর একসাথে শান্তিতে বসবাস করবে।
Sangbad365 Admin 












