ফরিদপুরে সমকামিতায় বাধ্য করার অভিযোগে রেদুয়ান (২৮) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জহির (২৫)। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে লাশের সঙ্গে বালুর বস্তা বেঁধে পাশের বিলে ফেলে দেওয়া হয়।
চারদিন নিখোঁজ থাকার পর গত ১৭ আগস্ট (রবিবার) দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার চারালদিয়া গ্রামের একটি বিল থেকে রেদুয়ানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই রাতেই র্যাব-১০ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জহুরুল মুন্সীকে গ্রেফতার করে।
র্যাব জানায়, নিহত রেদুয়ান ফরিদপুর সদরপুর থানার বাইশরশী এলাকার বাসিন্দা। গত ১৩ আগস্ট বিকালে তিনি মোটরসাইকেল ও একটি আইফোনসহ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন থেকে পরিবার তার কোনও খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। অবশেষে গত রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয়রা একটি বিলে তার মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়।
মরদেহ উদ্ধারের পর রেদুয়ানের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (পরিচালক) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সোমবার (১৮ আগস্ট) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহুরুল মুন্সী হত্যার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে— রেদুয়ানের সঙ্গে তার পূর্বে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের ইতি টানতে চাইলে রেদুয়ান পুনরায় তাকে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৩ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রেদুয়ানের নিজ বাড়িতে চাকু দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করে হত্যা করে জহুরুল।
হত্যার পর মরদেহ পাশের বিলে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ১৬ আগস্ট রাতে মৃতদেহে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে জহুরুল মরদেহের পেটের সঙ্গে জিআই তার দিয়ে দুটি বালুর বস্তা বেঁধে আবারও বিলে ফেলে দেয়।
অভিযানে র্যাব হত্যায় ব্যবহৃত চাকু, ভুক্তভোগীর ব্যাংক এশিয়া এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মানিব্যাগ, জুতা ও রক্তমাখা জামাকাপড় জব্দ করে। পাশাপাশি আসামির দেওয়া তথ্যমতে, মাদারীপুরের শিবচরের একটি মাদ্রাসা থেকে রেদুয়ানের ব্যক্তিগত সুজুকি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।