০৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলে সহকর্মীর বিরুদ্ধে নারী পুলিশকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৬০১৬ Time View

টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে এক নারী পুলিশ সদস্যকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই থানার আনিছুর রহমান নামের আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। তবে গতকাল অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হয়। 

অভিযুক্ত আনিছুর রহমান ও ভুক্তভোগী একই থানায় কর্মরত। গত ১৯ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার সময় থানা সংলগ্ন মসজিদের পশ্চিম পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। 

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আমি নারী কনস্টেবল গত ১৩ নভেম্বর থেকে এই থানায় কর্মরত। এখানে আসার পর থেকে থানার কনস্টেবল মো. আনিছুর রহমান আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন অফিসারদের জানালে কর্তৃপক্ষ তাকে একাধিকবার মৌখিকভাবে শাসন করলেও তোয়াক্কা করেননি। প্রতিনিয়ত উক্ত্যক্ত করতে থাকেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে পার্বত্য এলাকায় বদলির হুমকি দিতেন। গত ১৯ আগস্ট ডিউটি শেষে বাসায় যাওয়ার পথে রাস্তার ওপর আমার হাত ধরে টানাটানি করে তুলে নিতে চান। আমি চিৎকার করলে মুখ চেপে ধরে এবং যৌন হয়রানি করেন। একপর্যায়ে চিৎকার করলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে চলে যান। এ অবস্থায় বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করছি।

আবেদনের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইডি ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে পাঠিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন বাদী।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমি অভিযোগ দিয়েছি। এখানে সাংবাদিকদের করার কিছু নেই। এটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের বিষয়। আমি চাচ্ছি, ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমেই বিষয়টির সমাধান হোক। ইতোমধ্যে আমি ওই থানা থেকে বদলি হয়ে চলে এসেছি।’ 

তবে এ অভিযোগকে সাজানো ঘটনা বলে দাবি করেন অভিযুক্ত কনস্টেবল আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী একই থানায় কনস্টেবল পদে চাকরি করছি। আমার স্ত্রী মুন্সির সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। বিষয়টি ওই নারী পুলিশ সদস্য ভালোভাবে নিতেন না। তার সঙ্গে আমার প্রায় ছয় মাস ধরে কোনও কথা হয় না। বিষয়টি সাজানো ঘটনা। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’ 

ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘এমন ঘটনা তো আগে আমাকে জানানো প্রয়োজন। তিনি আমাকে কিছু জানাননি। আমাকে জানালে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করতাম। অভিযোগের বিষয়ে এখনও অফিসিয়ালি আবেদন পাইনি।’ 

টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিহাতি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে না জানিয়ে অভিযোগ দিলে আমি জানবো কীভাবে। একজন অভিযোগ দিলে তো তখন সে তার মতো করে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ দেন।’ 

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তদন্ত করা হয়। এটা আমাদের একদম মৌলিক কথা। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার নেওয়া হবে।’ 

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

টাঙ্গাইলে সহকর্মীর বিরুদ্ধে নারী পুলিশকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

সময়ঃ ১২:০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে এক নারী পুলিশ সদস্যকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই থানার আনিছুর রহমান নামের আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। তবে গতকাল অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হয়। 

অভিযুক্ত আনিছুর রহমান ও ভুক্তভোগী একই থানায় কর্মরত। গত ১৯ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার সময় থানা সংলগ্ন মসজিদের পশ্চিম পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। 

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আমি নারী কনস্টেবল গত ১৩ নভেম্বর থেকে এই থানায় কর্মরত। এখানে আসার পর থেকে থানার কনস্টেবল মো. আনিছুর রহমান আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন অফিসারদের জানালে কর্তৃপক্ষ তাকে একাধিকবার মৌখিকভাবে শাসন করলেও তোয়াক্কা করেননি। প্রতিনিয়ত উক্ত্যক্ত করতে থাকেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে পার্বত্য এলাকায় বদলির হুমকি দিতেন। গত ১৯ আগস্ট ডিউটি শেষে বাসায় যাওয়ার পথে রাস্তার ওপর আমার হাত ধরে টানাটানি করে তুলে নিতে চান। আমি চিৎকার করলে মুখ চেপে ধরে এবং যৌন হয়রানি করেন। একপর্যায়ে চিৎকার করলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে চলে যান। এ অবস্থায় বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করছি।

আবেদনের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইডি ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে পাঠিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন বাদী।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমি অভিযোগ দিয়েছি। এখানে সাংবাদিকদের করার কিছু নেই। এটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের বিষয়। আমি চাচ্ছি, ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমেই বিষয়টির সমাধান হোক। ইতোমধ্যে আমি ওই থানা থেকে বদলি হয়ে চলে এসেছি।’ 

তবে এ অভিযোগকে সাজানো ঘটনা বলে দাবি করেন অভিযুক্ত কনস্টেবল আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী একই থানায় কনস্টেবল পদে চাকরি করছি। আমার স্ত্রী মুন্সির সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। বিষয়টি ওই নারী পুলিশ সদস্য ভালোভাবে নিতেন না। তার সঙ্গে আমার প্রায় ছয় মাস ধরে কোনও কথা হয় না। বিষয়টি সাজানো ঘটনা। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’ 

ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘এমন ঘটনা তো আগে আমাকে জানানো প্রয়োজন। তিনি আমাকে কিছু জানাননি। আমাকে জানালে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করতাম। অভিযোগের বিষয়ে এখনও অফিসিয়ালি আবেদন পাইনি।’ 

টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিহাতি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে না জানিয়ে অভিযোগ দিলে আমি জানবো কীভাবে। একজন অভিযোগ দিলে তো তখন সে তার মতো করে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ দেন।’ 

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তদন্ত করা হয়। এটা আমাদের একদম মৌলিক কথা। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার নেওয়া হবে।’