‘ফাসিস্টের দোসর’ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতারা।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে শাহবাগে গণধিকার পরিষদ আয়োজিত সংহতি সভায় তারা এই দাবি তুলে ধরেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, “সম্প্রতি অনেকেই অনেক স্বপ্ন দেখছে। আমরা লক্ষ্য করছি, অনেকেই ভাবছেন জাতীয় পার্টি দিয়ে আবার এসে পড়বে। অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”
“স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই। স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজড। এই চ্যাপ্টার আর খোলার সুযোগ নাই। জনগণের ধাওয়ায় পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ফিরে আসার কোনো রকম নজির নাই। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা একটি মৃত মানুষ,” বলেন তিনি।
সোহেল বলেন, “এখন তো স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে, এখন তো স্বৈরাচার নাই। তাহলে নুরকে রক্তাক্ত করেছে কারা? আমরা বারবার বলেছি, প্রফেসর ইউনুস সাহেবকে, আপনার ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্তরে হাসিনার আন্ডা-বাচ্চা রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ব্যবস্থা কিছু কিছু হয়েছে, বেশি ক্ষেত্রেই হয় নাই। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা হয়েছে, এলোপ্যাথি চিকিৎসা হয় নাই।”
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও সবাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একজায়গায় বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা বলেন, “এখানে আমরা যারা আছি, বিভিন্ন পলিটিকাল পার্টি করি। আমাদের মধ্যে চিন্তা-ভাবনার পার্থক্য আছে, আদর্শগত পার্থক্য আছে, আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে কথা বলি, এটি সত্য। এটি তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কিন্তু একটি জায়গায় আমরা সব একই। সেটি হলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আমরা সবাই একটা জায়গায় এক, এক শরীর, এক মন, এক রক্ত এক জায়গা। ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আর আমরা হতে দেব না।”
ফ্যাসিস্টদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সোহেল বলেন, “একটি কথা মনে রাখবেন, ওই স্বপ্নের বাস্তবায়ন যদি বাংলাদেশে করতে আসেন বা রাস্তায় নামেন, আমরা কিন্তু আর হাত গুঁটিয়ে বসে থাকব না।”
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “এই হামলা শুধু নুর বা গণঅধিকার পরিষদের ওপর হামলা ছিল না; বরং বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লবের ওপর হামলা। এই হামলার মাধ্যমে ৫ আগস্ট যে ফ্যাসিবাদ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল, সেই ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের ফিরিয়ে আনার নতুন ষড়যন্ত্র।
“আমাদের দুর্ভাগ্য এই হামলার সঙ্গে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জড়িত রয়েছেন। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নুরের ওপর হামলা করছেন।”
জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে জুবায়ের বলেন, “ফ্যাসিবাদকে যারা শক্তি জুগিয়েছে, সেই জাতীয় পার্টির বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। দুই হাজার শহীদ ও ত্রিশ হাজার আহতদের ওয়াদা করছি আমরা, আজকে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ আছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে; আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থাকব, ইনশাআল্লাহ।
সংহতি সমাবেশে গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বক্তব্য দেন। প্রায় ত্রিশটি দলের নেতারা অংশ নিয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরে বক্তৃতা করেন।
তিন দাবিতে সংহতি সমাবেশ আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ। দাবিগুলো হলো: দলের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িতদের শাস্তি, আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি।
Sangbad365 Admin 





