০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৩ বছরেও মেরামত হয়নি সেতু, বাঁশের সাঁকোয় পারাপার

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৬০০৫ Time View

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কুস্তা এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অচল পড়ে আছে। ২০০২ সালে প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ হয়। এরপর নদীভাঙন ও বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশের একটি বড় অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর পূর্ব পাশের দুটি পাটাতন ধসে অচল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনেও সেতুর কোনো ধরনের সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি। ফলে গ্রামবাসী নিজেরাই ভাঙা সেতুর উপরে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনোরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন।

এই বাঁশের সাঁকোয় প্রতিদিন কুস্তা, ঠাকুরকান্দি, ভররা, বিনোদপুর, খলসী, কুমুরিয়া, বনগাঁও, নারচি ও জিয়নপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২-১৪ গ্রামের হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। শিশু থেকে বয়স্ক, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বাধ্য হচ্ছেন প্রতিদিন এই বিপজ্জনক পথ ব্যবহার করতে।

কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ দাশ বলেন, “আমরা অনেকবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কাজটি হয়নি। কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষ নিজেরা টাকা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছিল। এখন সেটিও ভেঙে নাজুক হয়ে গেছে। প্রতিদিন জানমালের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পারাপার করতে হচ্ছে।”

একই গ্রামের নিতিশ দাশ বলেন, “বন্যার সময় দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। তখন নদীর স্রোত এতটাই তীব্র থাকে যে সাঁকোর উপর দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। অনেক সময় স্কুলের বাচ্চারা পানিতে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার উপক্রম হয়।”

ঘিওর হাটের ব্যবসায়ী শফিক দেওয়ান জানান, শুধু সাধারণ যাত্রী নয়, ব্যবসায়ীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। কারণ পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় খরচ বেড়ে যায়।

হিমেল সুলতান বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা ও শিক্ষা-চিকিৎসার সঙ্গে সেতুটি সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ সেতু নির্মাণে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করি।’’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘‘সেতুটি পরিদর্শন করেছি। এটি এখনই ভেঙে নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

২৩ বছরেও মেরামত হয়নি সেতু, বাঁশের সাঁকোয় পারাপার

সময়ঃ ১২:০২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কুস্তা এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অচল পড়ে আছে। ২০০২ সালে প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ হয়। এরপর নদীভাঙন ও বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশের একটি বড় অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর পূর্ব পাশের দুটি পাটাতন ধসে অচল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনেও সেতুর কোনো ধরনের সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি। ফলে গ্রামবাসী নিজেরাই ভাঙা সেতুর উপরে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনোরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন।

এই বাঁশের সাঁকোয় প্রতিদিন কুস্তা, ঠাকুরকান্দি, ভররা, বিনোদপুর, খলসী, কুমুরিয়া, বনগাঁও, নারচি ও জিয়নপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২-১৪ গ্রামের হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। শিশু থেকে বয়স্ক, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও বাধ্য হচ্ছেন প্রতিদিন এই বিপজ্জনক পথ ব্যবহার করতে।

কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ দাশ বলেন, “আমরা অনেকবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কাজটি হয়নি। কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষ নিজেরা টাকা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়েছিল। এখন সেটিও ভেঙে নাজুক হয়ে গেছে। প্রতিদিন জানমালের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পারাপার করতে হচ্ছে।”

একই গ্রামের নিতিশ দাশ বলেন, “বন্যার সময় দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। তখন নদীর স্রোত এতটাই তীব্র থাকে যে সাঁকোর উপর দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। অনেক সময় স্কুলের বাচ্চারা পানিতে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার উপক্রম হয়।”

ঘিওর হাটের ব্যবসায়ী শফিক দেওয়ান জানান, শুধু সাধারণ যাত্রী নয়, ব্যবসায়ীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। কারণ পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় খরচ বেড়ে যায়।

হিমেল সুলতান বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা ও শিক্ষা-চিকিৎসার সঙ্গে সেতুটি সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ সেতু নির্মাণে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করি।’’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘‘সেতুটি পরিদর্শন করেছি। এটি এখনই ভেঙে নতুন করে নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”