প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ আপডেট: ২২:৫৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খাগড়াছড়িতে ১২ বছরের কিশোরী ধর্ষণের ন্যায়বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে নিরপরাধ আদিবাসীদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গত এক বছরে এই জেলায় ৭ জন আদিবাসী নারী ধর্ষণের শিকার হলেও, এখন পর্যন্ত কোনো ঘটনার বিচার হয়নি। এমতাবস্থায় পুনরায় কিশোরীকে বর্বোরিচত ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারের দাবিতে যৌক্তিক আন্দোলন কী অপরাধ? মূলত সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন প্রশাসনকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।”
সাংবিধানিকভাবে পাহাড়ে বসবাসকারী জাতিগোষ্ঠীগুলোকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করেছে।
ব্যাপক সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, “আদিবাসী নারীদের ধর্ষণের ঘটনাকে স্বাভাবিকত্ব দেওয়ার প্রচেষ্টা নতুন নয়। মূলত সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কেন এ সহিংসতা প্রতিরোধ করতে যথাসময়ে সক্রিয় ও কার্যকর কৌশল অবলম্বন করতে পারল না, এটি কী স্বার্থান্বেষী মহলের ধ্বংসাত্মক ষড়যন্ত্রের প্রতি উদাসীনতা না যোগসাজশ? যার ফলে পরিকল্পিতভাবে আদিবাসীদের অধিকারহরণ ও জাতিগত অবদমন প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রূপ দেওয়া হচ্ছে? ধর্ষণের শিকার নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে মামলাগ্রহণসহ পূরো বিচার-প্রক্রিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্ষককে রক্ষার প্রচেষ্টা দেখা যায়। এমতাবস্থায় ন্যায়বিচার না পাওয়ার শঙ্কা থেকে আদিবাসীদের চলমান আন্দোলন খুবই যৌক্তিক ঘটনা। প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সংবেদনশীল আচরণ কাম্য ছিল।”
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এদেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান স্বীকৃত সুরক্ষিত ও নিরাপদ জীবনযাপনের অধিকার আছে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বৈষম্য ও গোষ্ঠীগত নিপীড়নমূলক চর্চার ঊর্ধ্বে উঠে ধর্ষণসহ সব সংহিস ঘটনায় নিহতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এ জাতীয় ঘটনার পুরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব নয়। একইসঙ্গে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের ব্যর্থতাও দৃশ্যমান।”
“আমরা বিশ্বাস করি, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের সক্ষমতা মূলত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তিরক্ষায় সুনাম অর্জনকারীর দাবিদার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে। আশা করছি সেনাবাহিনী এই সক্ষমতার সময়োপযোগী ইতিবাচক সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে আদিবাসীদের অধিকারভিত্তিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রশংসনীয় অর্জনের সমতুল্য ভূমিকা পালনে সচেষ্ট হবে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
Sangbad365 Admin 













