০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘জাতীয় অগ্রগতিতে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ’

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৬০১৯ Time View

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ মো. আব্দুর রশীদ বলেছেন, জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং আগামী প্রজন্মকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বরং সমন্বিতভাবে তা সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ  কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে করতে হবে। সে জন্যই ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘যৌথ ঘোষণা’ সই করা করা হয়েছে। এখন প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিক নির্দেশনামূলক সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো কারিগরি সমর্থন নিশ্চিত করবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নিমিত্ত ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন কর্মকৌশল নির্ধারণ সম্পর্কিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্য উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫টি মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দফতর-সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কৃষি, খাদ্য, শিল্প, বাণিজ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিভিন্ন দফতরের প্রধানরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দফতরের পরিকল্পনা ও কর্মকৌশল নির্ধারণে করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ এর প্রতিনিধিরা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও এর আওতাধীন দফতর/সংস্থার প্রধানরা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় যেসব বিষয়াদি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে আলোচনা হয় সেগুলো হচ্ছে- মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সইকারী সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদারকি কমিটির মাধ্যমে ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ফলমূল-শাকসবজির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ, তামাক থেকে বিকল্প ফসল চাষে প্রণোদনা প্রদান, কৃষক সহায়তা, বাজার ও মূল্য স্থিতিশীলতা এবং কোল্ড স্টোরেজ ও পরিবহনসহ ফসল সংরক্ষণের অবকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে সামনের ও পেছনের অংশে লেবেলিং বাধ্যতামূলক, শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানীয়ের বিপণন সীমিত এবং ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছ, দুধ, ডিম ও চর্বিহীন মাংস উৎপাদন ও বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নীত করা; অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন ও রাসায়নিক ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তদারকি, পরিদর্শন ও প্রয়োগ কার্যক্রম জোরদার করা; স্বল্প-লবণ সংরক্ষণ পদ্ধতি ও রফতানির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা, উদ্ভাবন ও নীতি সহায়তা প্রদান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খাদ্য লেবেলিং ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের সামনের ও পেছনের অংশে পুষ্টি উপাদান, অ্যালার্জেন, সোডিয়াম, চিনি ও ক্ষতিকর চর্বির তথ্য স্পষ্টভাবে প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা, শিল্পখাত পুনর্গঠন ও প্রণোদনার মাধ্যমে লবণ, চিনি, ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট হ্রাসে খাদ্যপণ্যের পুনর্গঠন উৎসাহিত করা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আমদানি ও রফতানি খাদ্যে পুষ্টি মানদণ্ড কার্যকর, উচ্চ চিনি, লবণ ও ট্রান্স-ফ্যাটযুক্ত পণ্য সীমিতকরণ, নতুন ধরনের তামাক ও নিকোটিন পণ্য নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য ও তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে পোর্টে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু করা।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ (যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, আঘাজনিত অসুস্থতা ইত্যাদি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ‘যৌথ ঘোষণা’য় সই করে।

ট্যাগঃ

‘জাতীয় অগ্রগতিতে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ’

সময়ঃ ১২:০০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ মো. আব্দুর রশীদ বলেছেন, জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং আগামী প্রজন্মকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বরং সমন্বিতভাবে তা সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ  কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে করতে হবে। সে জন্যই ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘যৌথ ঘোষণা’ সই করা করা হয়েছে। এখন প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিক নির্দেশনামূলক সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো কারিগরি সমর্থন নিশ্চিত করবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নিমিত্ত ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন কর্মকৌশল নির্ধারণ সম্পর্কিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্য উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫টি মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দফতর-সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কৃষি, খাদ্য, শিল্প, বাণিজ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিভিন্ন দফতরের প্রধানরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দফতরের পরিকল্পনা ও কর্মকৌশল নির্ধারণে করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ এর প্রতিনিধিরা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও এর আওতাধীন দফতর/সংস্থার প্রধানরা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় যেসব বিষয়াদি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে আলোচনা হয় সেগুলো হচ্ছে- মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সইকারী সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদারকি কমিটির মাধ্যমে ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ফলমূল-শাকসবজির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ, তামাক থেকে বিকল্প ফসল চাষে প্রণোদনা প্রদান, কৃষক সহায়তা, বাজার ও মূল্য স্থিতিশীলতা এবং কোল্ড স্টোরেজ ও পরিবহনসহ ফসল সংরক্ষণের অবকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে সামনের ও পেছনের অংশে লেবেলিং বাধ্যতামূলক, শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানীয়ের বিপণন সীমিত এবং ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছ, দুধ, ডিম ও চর্বিহীন মাংস উৎপাদন ও বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নীত করা; অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন ও রাসায়নিক ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তদারকি, পরিদর্শন ও প্রয়োগ কার্যক্রম জোরদার করা; স্বল্প-লবণ সংরক্ষণ পদ্ধতি ও রফতানির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা, উদ্ভাবন ও নীতি সহায়তা প্রদান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খাদ্য লেবেলিং ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের সামনের ও পেছনের অংশে পুষ্টি উপাদান, অ্যালার্জেন, সোডিয়াম, চিনি ও ক্ষতিকর চর্বির তথ্য স্পষ্টভাবে প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা, শিল্পখাত পুনর্গঠন ও প্রণোদনার মাধ্যমে লবণ, চিনি, ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট হ্রাসে খাদ্যপণ্যের পুনর্গঠন উৎসাহিত করা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আমদানি ও রফতানি খাদ্যে পুষ্টি মানদণ্ড কার্যকর, উচ্চ চিনি, লবণ ও ট্রান্স-ফ্যাটযুক্ত পণ্য সীমিতকরণ, নতুন ধরনের তামাক ও নিকোটিন পণ্য নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য ও তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে পোর্টে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু করা।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ (যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, আঘাজনিত অসুস্থতা ইত্যাদি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ‘যৌথ ঘোষণা’য় সই করে।