জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কুষ্টিয়া জেলা শাখার কমিটি থেকে এবাদত আলী ও শরিফুল ইসলাম সবুজ নামের দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও পদত্যাগ চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি আবেদন করেন তারা।
ওই লিখিত আবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
অব্যাহতি চাওয়া এবাদত এনসিপি কুষ্টিয়া জেলা শাখার ১ নম্বর যুগ্ম-সমন্বয়কারী এবং শরিফুল ২ নম্বর সদস্য।
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনে মো. এবাদত আলী লেখেন, “আমি জুলাই ২০২৪ আন্দোলনে একজন একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে সক্রিয় ছিলাম। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীকালে জাতীয় নাগরিক কমিটি নামের একটি অরাজনৈতিক সংগঠনে কুষ্টিয়া সদরে প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করি। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠিত হলে আমাকে কুষ্টিয়া জেলার ১ নম্বর যুগ্ম-সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।”
দায়িত্ব দেওয়া এনসিপিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরো লেখেন, “বর্তমানে পারিবারিক দায়-দায়িত্ব ও বয়স বিবেচনায় দলের প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করছি। তারপরও একটি বৈষম্যহীন, ফ্যাসিবাদমুক্ত ও আধিপত্যবাদমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনে যারা রাজপথে থাকবেন, তাদের প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
শরিফুল ইসলাম সবুজ পদত্যাগপত্রে লেখেন, “সূচনালগ্ন থেকে এনসিপির কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলাম। বিশ্বাস করেছিলাম, এই দল জুলাই আন্দোলনের মূল্যবোধ ধারণ করবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দল তার পথ হারিয়েছে। নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডে আপসনীতি ও সুবিধাবাদী ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি।”
তিনি লেখেন, “আমার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট- আন্দোলনের চেতনা বিসর্জন দিয়ে কোনো দল বা নেতৃত্বকে অনুসরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব, আজকের তারিখ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির সব কার্যক্রম ও সদস্যপদ থেকে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করছি।”
এবাদত আলী ও শরিফুল ইসলাম সবুজ গণমাধ্যমকে বলেন, দলীয় কর্মকাণ্ডে অনিয়ম ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডসহ ব্যক্তিগত কারণে আমরা এনসিপির সব ধরনের দায়িত্ব ও কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। ভবিষ্যতে দলে থাকা-না থাকার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব।
কুষ্টিয়া জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি বলেন, “পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো দলীয় নিয়ম অনুযায়ী কোনো আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি। কেন তারা পদত্যাগ করছেন, তাও আমাকে জানানো হয়নি।”
এনসিপির যুগ্ম-সদস্য সচিব ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “কুষ্টিয়ার দুই নেতার পদত্যাগের বিষয়টি আমি অবগত নই। পদত্যাগপত্র হাতে পেলে কী কারণে দল ছেড়ে যাচ্ছেন, তা বলতে পারতাম।”
Sangbad365 Admin 













