০১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষুদ্র দ্বীপদেশ কেপ ভার্দের ‘বিশ্বকাপ’ স্বপ্ন ছোঁয়ার ইতিহাস

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০০:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৬০০৯ Time View

আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে ছড়িয়ে থাকা দশটি ছোট্ট দ্বীপ। নাম তাদের কেপ ভার্দে। জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখের কিছু বেশি। ঢাকার একটি থানা এলাকার চেয়েও কম। অথচ সেই দেশই লিখে ফেলল এক বিস্ময়গাথা। ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে তারা!

এসওয়াতিনির বিপক্ষে সোমবারের ৩-০ গোলের জয়ে পূর্ণতা পেল তাদের দুই দশকের স্বপ্ন। ডেইলন লিভ্রামেন্টো, উইলি সেমেডো ও স্টোপিরার গোলগুলো যেন শুধু ম্যাচ জেতায়নি, জিতিয়েছে গোটা জাতির গর্ব, আত্মবিশ্বাস আর আবেগ। প্রাইয়ার ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ছোট্ট স্টেডিয়ামটা মুহূর্তেই রূপ নিয়েছিল আনন্দমেলায়। নাচ, গান আর উল্লাসে মুখর ছিল পুরো শহর।

ব্লু শার্কস নামে পরিচিত কেপ ভার্দে ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। তারা পিছনে ফেলেছে আফ্রিকার পরাশক্তি ক্যামেরুনকে, যারা এর আগে আটবার খেলেছে বিশ্বকাপের মূল পর্বে।

ফিফা র‍্যাংকিংয়ে এখন তাদের অবস্থান ৭০তম। ১২ দলের ঘরোয়া লিগ থাকা দেশটির ফুটবল অনেকটাই নির্ভর করে প্রবাসী খেলোয়াড়দের ওপর। তাদের এক খেলোয়াড়, আইরিশ ক্লাব শ্যামরক রোভার্সের রবার্তো লোপেজকে তো জাতীয় দলে ডাক দেওয়া হয়েছিল লিঙ্কডইনের মাধ্যমে! এমন গল্প ফুটবলের জগতে বিরলই বটে।

১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর ২০০২ সালে কেপ ভার্দে প্রথমবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নেয়। দীর্ঘ ২৩ বছরের অপেক্ষা শেষে অবশেষে তারা ছুঁয়ে ফেলল বিশ্বমঞ্চের আলো।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসেও দেশটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০১৩ সালে অভিষেকেই খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে, ২০২৩ সালেও ছিল শেষ আটে। এবার ক্যামেরুনকে হারিয়ে, লিবিয়ার মাঠে রোমাঞ্চকর ড্র করে, আর এসওয়াতিনিকে হারিয়ে তারা পৌঁছে গেছে সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।

ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এই অর্জনকে বলেছেন, “অসাধারণ প্রেরণার উৎস”। যা কেপ ভার্দের তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে, ফুটবলে বিশ্বাস যোগাবে।

আইসল্যান্ডের পর বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পাওয়া দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে কেপ ভার্দে এখন কেবল একটি নাম নয়, এটি এক আশার প্রতীক। যে প্রমাণ করে, স্বপ্নের মাপ জনসংখ্যায় নয়, বিশ্বাসে।

২০২৬ সালের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মাঠে এখন অপেক্ষা আফ্রিকার নতুন প্রতিনিধি কেপ ভার্দের নীল হাঙরদের জন্য, যারা বিশ্বকে দেখাতে চায় সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো তাদের আবেগও অদম্য।

ট্যাগঃ

ক্ষুদ্র দ্বীপদেশ কেপ ভার্দের ‘বিশ্বকাপ’ স্বপ্ন ছোঁয়ার ইতিহাস

সময়ঃ ১২:০০:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে ছড়িয়ে থাকা দশটি ছোট্ট দ্বীপ। নাম তাদের কেপ ভার্দে। জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখের কিছু বেশি। ঢাকার একটি থানা এলাকার চেয়েও কম। অথচ সেই দেশই লিখে ফেলল এক বিস্ময়গাথা। ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে তারা!

এসওয়াতিনির বিপক্ষে সোমবারের ৩-০ গোলের জয়ে পূর্ণতা পেল তাদের দুই দশকের স্বপ্ন। ডেইলন লিভ্রামেন্টো, উইলি সেমেডো ও স্টোপিরার গোলগুলো যেন শুধু ম্যাচ জেতায়নি, জিতিয়েছে গোটা জাতির গর্ব, আত্মবিশ্বাস আর আবেগ। প্রাইয়ার ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ছোট্ট স্টেডিয়ামটা মুহূর্তেই রূপ নিয়েছিল আনন্দমেলায়। নাচ, গান আর উল্লাসে মুখর ছিল পুরো শহর।

ব্লু শার্কস নামে পরিচিত কেপ ভার্দে ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। তারা পিছনে ফেলেছে আফ্রিকার পরাশক্তি ক্যামেরুনকে, যারা এর আগে আটবার খেলেছে বিশ্বকাপের মূল পর্বে।

ফিফা র‍্যাংকিংয়ে এখন তাদের অবস্থান ৭০তম। ১২ দলের ঘরোয়া লিগ থাকা দেশটির ফুটবল অনেকটাই নির্ভর করে প্রবাসী খেলোয়াড়দের ওপর। তাদের এক খেলোয়াড়, আইরিশ ক্লাব শ্যামরক রোভার্সের রবার্তো লোপেজকে তো জাতীয় দলে ডাক দেওয়া হয়েছিল লিঙ্কডইনের মাধ্যমে! এমন গল্প ফুটবলের জগতে বিরলই বটে।

১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর ২০০২ সালে কেপ ভার্দে প্রথমবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নেয়। দীর্ঘ ২৩ বছরের অপেক্ষা শেষে অবশেষে তারা ছুঁয়ে ফেলল বিশ্বমঞ্চের আলো।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসেও দেশটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ২০১৩ সালে অভিষেকেই খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে, ২০২৩ সালেও ছিল শেষ আটে। এবার ক্যামেরুনকে হারিয়ে, লিবিয়ার মাঠে রোমাঞ্চকর ড্র করে, আর এসওয়াতিনিকে হারিয়ে তারা পৌঁছে গেছে সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।

ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এই অর্জনকে বলেছেন, “অসাধারণ প্রেরণার উৎস”। যা কেপ ভার্দের তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে, ফুটবলে বিশ্বাস যোগাবে।

আইসল্যান্ডের পর বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পাওয়া দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে কেপ ভার্দে এখন কেবল একটি নাম নয়, এটি এক আশার প্রতীক। যে প্রমাণ করে, স্বপ্নের মাপ জনসংখ্যায় নয়, বিশ্বাসে।

২০২৬ সালের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মাঠে এখন অপেক্ষা আফ্রিকার নতুন প্রতিনিধি কেপ ভার্দের নীল হাঙরদের জন্য, যারা বিশ্বকে দেখাতে চায় সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো তাদের আবেগও অদম্য।