০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘গণহত্যা সমর্থনকারী শিক্ষক থেকে আমরা শিক্ষা নিতে চাই না

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৬০০৬ Time View

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে ৫-৭টি ব্যাচ চলমান থাকলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দুজন, যা শিক্ষার মানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। এক্ষেত্রে শাহবাগকে প্রতিষ্ঠিত করে, বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, গণহত্যা সমর্থনকারী শিক্ষক থেকে আমরা কোনো শিক্ষা নিতে চাই না। অবশ্যই যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।”

শনিবার (১৮ অক্টোবর) যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবিতে শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুল হাসান বলেন, “ইবি শিক্ষার্থী সাজিদকে হত্যার ৯৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই নয়, ইন্টেরিম সরকারেরও ব্যর্থতা। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাজিদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা না হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”

ছাত্র সংসদ নিয়ে তিনি বলেন, “প্রশাসন আইনের অজুহাত দেখিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করছে না। অথচ বেগম রোকেয়া ও জগন্নাথের মতো নবীন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের আইন পাস করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন ১৫ তারিখের মধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করার আশ্বাস দিলেও ১৮ তারিখ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ নিয়ে প্রশাসন কোনো রকম টালবাহানা করলে শিক্ষার্থীরা তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন হলগুলোর দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, “২০১৮ সালে টেন্ডার হওয়া হলের নির্মাণ কাজ ২০২৫ সালেও শেষ হয়নি, যা শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটকে তীব্রতর করছে। চলতি বছরের মধ্যেই সব হলের নির্মাণ কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের কাছে হস্তান্তর ও মেধার ভিত্তিতে সিট বণ্টন করতে হবে।”

মাহমুদুল হাসান বলেন, “একটি নির্দিষ্ট মহল আবারো আওয়ামী লীগের শাসনামলের মতো করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম ও গেস্টরুম সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, যেখানে প্রাধ্যক্ষরাও সহযোগিতা করছেন। কোনোভাবেই হলগুলোকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না। যদি এমন কোনো চেষ্টা করা হয়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।”

সমাবেশে অনতিবিলম্বে সাজিদ হত্যার বিচার, ইকসুর নীতিমালা ও রোডম্যাপ প্রদান, ডিজিটাল পেমেন্ট নিশ্চিতকরণ, এ বছরেই নির্মাণাধীন হলসমূহ চালু এবং মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানায় সংগঠনটি। এছাড়া সাতদিনের মধ্যে পেমেন্ট সিস্টেম ডিজিটালাইজেশনে পদক্ষেপে না নিলে প্রশাসন অচল করে দেওয়া হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটি। 

এর আগে, দুপুর দেড়টার দিকে বটতলা থেকে মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। 

মিছিলে তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘সাজিদ মৃত্যুর তদন্ত, দ্রুত করো, করতে হবে’, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করো, শিক্ষার্থীদের রক্ষা করো’, ‘হলগুলো চালু করো, ভোগান্তি দূর করো’, ‘ইকসুর তারিখ ঘোষণা করো, ছাত্র সংসদ নিশ্চিত করো’, ‘বিশ্ব যখন আধুনিক, ইবি কেন যান্ত্রিক’, ‘ডিজিটাল পেমেন্ট চালু হোক, ভোগান্তি দূর হোক’, ‘নিয়োগ হবে স্বচ্ছ, শিক্ষক হবে দক্ষ’, ‘মেধা আর স্বচ্ছতা, নিয়োগে চাই ন্যায্যতা’, ‘আবু সাইদের বাংলায়, নিয়োগ বাণিজ্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে সংগঠনের শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবসার নবী হামজা, দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক হাসানুল বান্না অলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগঃ

‘গণহত্যা সমর্থনকারী শিক্ষক থেকে আমরা শিক্ষা নিতে চাই না

সময়ঃ ১২:০৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে ৫-৭টি ব্যাচ চলমান থাকলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দুজন, যা শিক্ষার মানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। এক্ষেত্রে শাহবাগকে প্রতিষ্ঠিত করে, বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, গণহত্যা সমর্থনকারী শিক্ষক থেকে আমরা কোনো শিক্ষা নিতে চাই না। অবশ্যই যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।”

শনিবার (১৮ অক্টোবর) যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবিতে শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুল হাসান বলেন, “ইবি শিক্ষার্থী সাজিদকে হত্যার ৯৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই নয়, ইন্টেরিম সরকারেরও ব্যর্থতা। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাজিদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা না হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”

ছাত্র সংসদ নিয়ে তিনি বলেন, “প্রশাসন আইনের অজুহাত দেখিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করছে না। অথচ বেগম রোকেয়া ও জগন্নাথের মতো নবীন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের আইন পাস করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন ১৫ তারিখের মধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করার আশ্বাস দিলেও ১৮ তারিখ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ নিয়ে প্রশাসন কোনো রকম টালবাহানা করলে শিক্ষার্থীরা তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন হলগুলোর দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, “২০১৮ সালে টেন্ডার হওয়া হলের নির্মাণ কাজ ২০২৫ সালেও শেষ হয়নি, যা শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটকে তীব্রতর করছে। চলতি বছরের মধ্যেই সব হলের নির্মাণ কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের কাছে হস্তান্তর ও মেধার ভিত্তিতে সিট বণ্টন করতে হবে।”

মাহমুদুল হাসান বলেন, “একটি নির্দিষ্ট মহল আবারো আওয়ামী লীগের শাসনামলের মতো করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম ও গেস্টরুম সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, যেখানে প্রাধ্যক্ষরাও সহযোগিতা করছেন। কোনোভাবেই হলগুলোকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না। যদি এমন কোনো চেষ্টা করা হয়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।”

সমাবেশে অনতিবিলম্বে সাজিদ হত্যার বিচার, ইকসুর নীতিমালা ও রোডম্যাপ প্রদান, ডিজিটাল পেমেন্ট নিশ্চিতকরণ, এ বছরেই নির্মাণাধীন হলসমূহ চালু এবং মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানায় সংগঠনটি। এছাড়া সাতদিনের মধ্যে পেমেন্ট সিস্টেম ডিজিটালাইজেশনে পদক্ষেপে না নিলে প্রশাসন অচল করে দেওয়া হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটি। 

এর আগে, দুপুর দেড়টার দিকে বটতলা থেকে মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। 

মিছিলে তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘সাজিদ মৃত্যুর তদন্ত, দ্রুত করো, করতে হবে’, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করো, শিক্ষার্থীদের রক্ষা করো’, ‘হলগুলো চালু করো, ভোগান্তি দূর করো’, ‘ইকসুর তারিখ ঘোষণা করো, ছাত্র সংসদ নিশ্চিত করো’, ‘বিশ্ব যখন আধুনিক, ইবি কেন যান্ত্রিক’, ‘ডিজিটাল পেমেন্ট চালু হোক, ভোগান্তি দূর হোক’, ‘নিয়োগ হবে স্বচ্ছ, শিক্ষক হবে দক্ষ’, ‘মেধা আর স্বচ্ছতা, নিয়োগে চাই ন্যায্যতা’, ‘আবু সাইদের বাংলায়, নিয়োগ বাণিজ্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে সংগঠনের শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবসার নবী হামজা, দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক হাসানুল বান্না অলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।