০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ কলম্বিয়ার

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৬০০৮ Time View

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং একজন জেলেকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন। রবিবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১৮ অক্টোবর) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেট্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘হত্যাকাণ্ডের’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন।  

এক্স-পোস্টে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, “মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা একটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং আঞ্চলিক জলসীমায় আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছেন। মৎস্যজীবী আলেজান্দ্রো ক্যারাঞ্জারের সঙ্গে মাদক ব্যবসার কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং তার দৈনন্দিন কাজ ছিল মাছ ধরা।”

ক্যারাঞ্জার গত ১৫ সেপ্টেম্বর ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাছ ধরার সময় তার নৌকায় মার্কিন বাহিনী হামলা চালালে নিহত হন।

পেত্রো মার্কিন হামলার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভেনেজুয়েলার ‘মাদক বহনকারী ডুবোজাহাজে’ হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করার কথা বলার পর, কলম্বিয়া এবার সেপ্টেম্বরের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ আনলো।

এদিকে, বৃহস্পতিবারের হামলা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, ওই ডুবোজাহাজে  ফেন্টানিল ও অন্যান্য অবৈধ মাদক ছিল। ট্রাম্পের দাবি, ডুবোজাহাজে ছিলেন চার জন ‘মাদকপাচারকারী জঙ্গি’। তাদের মধ্যে দুজন নিহত হয়েছে। বাকি দুজনকে আটক করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবারের এ হামলা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবিয়ান সাগরে মাদকপাচার সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ হামলা। এবারই প্রথম কারো জীবিত থাকার কথা জানা গেল। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আটক দুই ব্যক্তিকে তাদের মূল দেশ ইকুয়েডর এবং কলম্বিয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাদকবাহী নৌযানে পূর্ববর্তী পাঁচটি মার্কিন হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।বর্তমানে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন বেড়ে ৬৫০০ সেনা, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও একটি পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে।

ট্রাম্প ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সামরিক অভিযানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ল্যাটিন আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হচ্ছে। তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ বা বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।  

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, মাদক পাচার চক্রের অন্যতম ঘাঁটি রয়েছে ভেনেজুয়েলায়। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এই সব মাদকবাহী নৌযান পাঠানো হয়। মার্কিন কর্মকর্তারা ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। 

এদিকে মাদুরো অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প তার দেশকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশ’ বানানোর চেষ্টা করছেন।

গত বুধবার  (১৫ অক্টোবর) ট্রাম্প জানান, তিনি মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো জানান, তিনি ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর কথাও ভাবছেন।

মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার দেশ মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তবে তিনি যুদ্ধের পরিবর্তে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপের বসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

ট্যাগঃ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ কলম্বিয়ার

সময়ঃ ১২:০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং একজন জেলেকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন। রবিবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১৮ অক্টোবর) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেট্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘হত্যাকাণ্ডের’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন।  

এক্স-পোস্টে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, “মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা একটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং আঞ্চলিক জলসীমায় আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছেন। মৎস্যজীবী আলেজান্দ্রো ক্যারাঞ্জারের সঙ্গে মাদক ব্যবসার কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং তার দৈনন্দিন কাজ ছিল মাছ ধরা।”

ক্যারাঞ্জার গত ১৫ সেপ্টেম্বর ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাছ ধরার সময় তার নৌকায় মার্কিন বাহিনী হামলা চালালে নিহত হন।

পেত্রো মার্কিন হামলার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভেনেজুয়েলার ‘মাদক বহনকারী ডুবোজাহাজে’ হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করার কথা বলার পর, কলম্বিয়া এবার সেপ্টেম্বরের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ আনলো।

এদিকে, বৃহস্পতিবারের হামলা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, ওই ডুবোজাহাজে  ফেন্টানিল ও অন্যান্য অবৈধ মাদক ছিল। ট্রাম্পের দাবি, ডুবোজাহাজে ছিলেন চার জন ‘মাদকপাচারকারী জঙ্গি’। তাদের মধ্যে দুজন নিহত হয়েছে। বাকি দুজনকে আটক করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবারের এ হামলা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবিয়ান সাগরে মাদকপাচার সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ হামলা। এবারই প্রথম কারো জীবিত থাকার কথা জানা গেল। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আটক দুই ব্যক্তিকে তাদের মূল দেশ ইকুয়েডর এবং কলম্বিয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাদকবাহী নৌযানে পূর্ববর্তী পাঁচটি মার্কিন হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।বর্তমানে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন বেড়ে ৬৫০০ সেনা, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও একটি পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে।

ট্রাম্প ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সামরিক অভিযানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ল্যাটিন আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হচ্ছে। তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ বা বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।  

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, মাদক পাচার চক্রের অন্যতম ঘাঁটি রয়েছে ভেনেজুয়েলায়। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এই সব মাদকবাহী নৌযান পাঠানো হয়। মার্কিন কর্মকর্তারা ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। 

এদিকে মাদুরো অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প তার দেশকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশ’ বানানোর চেষ্টা করছেন।

গত বুধবার  (১৫ অক্টোবর) ট্রাম্প জানান, তিনি মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো জানান, তিনি ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর কথাও ভাবছেন।

মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার দেশ মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তবে তিনি যুদ্ধের পরিবর্তে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপের বসার আহ্বান জানিয়েছেন।