০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছয় শতাধিক উদ্যোক্তা, গাছী ও গবেষক নিয়ে রাবিতে গুড় সম্মেলন

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০১:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৬০০৪ Time View

দেশের ৬৪টি জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক গুড় উৎপাদনকারী, গাছী, উদ্যোক্তা এবং গবেষক নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ‘গুড় সম্মেলন ২০২৫’।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ‘রস ও গুড়’ এবং রাবি উদ্যোক্তা ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল চা, তাও খেজুরের বিচি দিয়ে তৈরি। খাবার খাওয়ার পর ডেজার্ট হিসেবে ছিল ঘ্রাণ ছড়ানো নতুন খেজুর গুড়ের পায়েশ। এসময় কয়েকটি স্টলে গুড় উৎপাদন, গুড় গবেষণা, বাজারজাতকরণ ও বিভিন্ন প্রকার গুড়ের প্রদর্শনী করা হয়। খেজুরপাতা দিয়ে তৈরি মসজিদ, জায়নামাজ, তসবীহ ছিল অন্যতম আকর্ষণ।

সম্মেলনে অংশ নেওয়া গবেষক ও উদ্যোক্তা সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার বলেন, “আমরা চাই গুড়ের মত একটা সম্ভবনাময় শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে। গুড়কে বিশুদ্ধভাবে সরবরাহ করা এবং বিদেশে গুড় রপ্তানি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমরা চাইনিজ জায়নামাজ, মেসওয়াক, তসবীহসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকি। কিন্তু আমরা চাইলেই খেজুর গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে দৈনন্দিন বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারি।”

সম্মেলনে অংশ নেওয়া আরেক উদ্যোক্তা বলেন, “এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। সম্মেলনে এসে আমরা জানতে পেরেছি কীভাবে ভালো গুড় উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ভোক্তাদের কাছে বাজারজাতকরণ করা যায়। এই সম্মলনের মাধ্যমে আমরা যতটা সচেতন হব, ঠিক ততটাই উপকৃত হবে ভোক্তারা।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “আমরা যে গুড় খেয়ে থাকি সেখানে কোনো ক্যামিকাল থাকে না কিন্তু আমরা যে চিনি খাই সেটা অনেক প্রকার ক্যামিকাল দিয়ে তৈরি। গরম চায়ে আমরা যখন চিনি ব্যবহার করছি, তখন আরো প্রায় ২৭ প্রকার ক্যামিক্যাল উৎপন্ন হচ্ছে, যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে গুড়ের ব্যবহারে এমন কোনো ক্ষতি নেই। এটা অর্গানিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত। গুড়ের ব্যবহারের প্রচলন আমাদের বাড়াতে হবে।”

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসআরআই-এর মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “হোয়াইট সুগার এবং লবণ এগুলো হচ্ছে হোয়াইট পয়জন। হোয়াইট সুগার বাদ দিয়ে গুড় অথবা ব্রাউন সুগার বেছে নেওয়া উচিত। গুড় শরীরকে ঠান্ডা রাখে। আমরা চা, শরবত অথবা মিষ্টিজাতীয় খাবারে গুড় ব্যবহার করতে পারি।”

উদোক্ত্যাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট অংশজুড়ে আছেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের চাকরির পেছনে না দৌড়ে উদোক্ত্যা হওয়া উচিত। এতে একাধারে যেমন সে নিজে সাবলম্বী হতে পারবে, পাশাপাশি আরো দশজন বেকার সাবলম্বী হবে।”

ট্যাগঃ

ছয় শতাধিক উদ্যোক্তা, গাছী ও গবেষক নিয়ে রাবিতে গুড় সম্মেলন

সময়ঃ ১২:০১:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

দেশের ৬৪টি জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক গুড় উৎপাদনকারী, গাছী, উদ্যোক্তা এবং গবেষক নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ‘গুড় সম্মেলন ২০২৫’।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ‘রস ও গুড়’ এবং রাবি উদ্যোক্তা ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল চা, তাও খেজুরের বিচি দিয়ে তৈরি। খাবার খাওয়ার পর ডেজার্ট হিসেবে ছিল ঘ্রাণ ছড়ানো নতুন খেজুর গুড়ের পায়েশ। এসময় কয়েকটি স্টলে গুড় উৎপাদন, গুড় গবেষণা, বাজারজাতকরণ ও বিভিন্ন প্রকার গুড়ের প্রদর্শনী করা হয়। খেজুরপাতা দিয়ে তৈরি মসজিদ, জায়নামাজ, তসবীহ ছিল অন্যতম আকর্ষণ।

সম্মেলনে অংশ নেওয়া গবেষক ও উদ্যোক্তা সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার বলেন, “আমরা চাই গুড়ের মত একটা সম্ভবনাময় শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে। গুড়কে বিশুদ্ধভাবে সরবরাহ করা এবং বিদেশে গুড় রপ্তানি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমরা চাইনিজ জায়নামাজ, মেসওয়াক, তসবীহসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকি। কিন্তু আমরা চাইলেই খেজুর গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে দৈনন্দিন বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারি।”

সম্মেলনে অংশ নেওয়া আরেক উদ্যোক্তা বলেন, “এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। সম্মেলনে এসে আমরা জানতে পেরেছি কীভাবে ভালো গুড় উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ভোক্তাদের কাছে বাজারজাতকরণ করা যায়। এই সম্মলনের মাধ্যমে আমরা যতটা সচেতন হব, ঠিক ততটাই উপকৃত হবে ভোক্তারা।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “আমরা যে গুড় খেয়ে থাকি সেখানে কোনো ক্যামিকাল থাকে না কিন্তু আমরা যে চিনি খাই সেটা অনেক প্রকার ক্যামিকাল দিয়ে তৈরি। গরম চায়ে আমরা যখন চিনি ব্যবহার করছি, তখন আরো প্রায় ২৭ প্রকার ক্যামিক্যাল উৎপন্ন হচ্ছে, যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে গুড়ের ব্যবহারে এমন কোনো ক্ষতি নেই। এটা অর্গানিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত। গুড়ের ব্যবহারের প্রচলন আমাদের বাড়াতে হবে।”

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসআরআই-এর মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “হোয়াইট সুগার এবং লবণ এগুলো হচ্ছে হোয়াইট পয়জন। হোয়াইট সুগার বাদ দিয়ে গুড় অথবা ব্রাউন সুগার বেছে নেওয়া উচিত। গুড় শরীরকে ঠান্ডা রাখে। আমরা চা, শরবত অথবা মিষ্টিজাতীয় খাবারে গুড় ব্যবহার করতে পারি।”

উদোক্ত্যাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট অংশজুড়ে আছেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের চাকরির পেছনে না দৌড়ে উদোক্ত্যা হওয়া উচিত। এতে একাধারে যেমন সে নিজে সাবলম্বী হতে পারবে, পাশাপাশি আরো দশজন বেকার সাবলম্বী হবে।”