১১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবাই এখন দৌড়ের ওপর

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৬০১৫ Time View

শেষ রাতের আয়েশি ঘুম ছেড়ে হাজির একদল নারী-পুরুষ। জুতার ফিতায় পা দুটোকে বেঁধে স্টার্ট লাইনের সামনে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। সদ্য গোঁফ গজানো কিশোর থেকে কাশফুলের মতো সাদা কেশগুচ্ছের অধিকারী প্রবীণ—আছেন সবাই। সবার চোখেমুখেই ব্যগ্রতা। রেস পরিচালকের ‘স্টার্ট’ শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের পদাঘাতে মুখর হয় পথ। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, এদের পথের কোনো শেষ নেই; দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছেই!

মানুষের শারীরিক সক্ষমতার সে কী বলিষ্ঠ প্রকাশ! আর কেউবা ধীর, স্থির পদচালনে অভ্যস্ত। একদমই অচেনা কারও পাশাপাশি দৌড়াতে গিয়ে খসে পড়ে অপরিচয়ের দেয়াল। এই সান্নিধ্যসুখ অনেকের জীবনেই থেকে যায় লম্বা সময়। দৌড়ের সময় আশপাশের বাড়ির উঠান থেকে অনেকেই করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান।

লম্বা দৌড়ে শরীর যখন মনের কথা শুনতে চায় না, তখন একদম অচেনা কারও কাছ থেকে পাওয়া এইটুকু উৎসাহ রীতিমতো টনিকের কাজ করে। পাঁজরের ভেতর বুনো ঘোড়ার মতো লাফাতে থাকা হৃৎপিণ্ডকে কেয়ার করার ফুরসত তখন কই। সবকিছুর যেমন শেষ আছে, একসময় পথও ফুরোয়।

ভোরের আকাশে তখন হয়তোবা শিশুসূর্যের রাজত্ব। শেষের রেখা ছুঁয়ে অনেকের চোখেই থাকে অসাধ্য সাধনের আনন্দ, নিজেদের সামর্থ্যের পারদটা আরেকটু উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার পুলক। টানা দৌড়ানোর ফলে জীবনীশক্তি খানিকটা নিবু নিবু হলেও ফিনিশ লাইনে পৌঁছালে ঠোঁটে থাকে অমূল্য হাসি। শেষের রেখায় পৌঁছানোর আনন্দের কাছে ম্লান হয়ে যায় পথের শ্রান্তি।

ঢাকা কিংবা বিভাগীয় শহর তো বটেই, দেশের নানা জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ রকম যূথবব্ধ দৌড় এখন সাধারণ চিত্র। আর এসব রানারদের কারণে দেশের বড় একটা অংশের কাছে দৌড় এখন হয়ে গেছে জীবনের অঙ্গ!

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

সবাই এখন দৌড়ের ওপর

সময়ঃ ১২:০১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

শেষ রাতের আয়েশি ঘুম ছেড়ে হাজির একদল নারী-পুরুষ। জুতার ফিতায় পা দুটোকে বেঁধে স্টার্ট লাইনের সামনে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। সদ্য গোঁফ গজানো কিশোর থেকে কাশফুলের মতো সাদা কেশগুচ্ছের অধিকারী প্রবীণ—আছেন সবাই। সবার চোখেমুখেই ব্যগ্রতা। রেস পরিচালকের ‘স্টার্ট’ শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের পদাঘাতে মুখর হয় পথ। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, এদের পথের কোনো শেষ নেই; দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছেই!

মানুষের শারীরিক সক্ষমতার সে কী বলিষ্ঠ প্রকাশ! আর কেউবা ধীর, স্থির পদচালনে অভ্যস্ত। একদমই অচেনা কারও পাশাপাশি দৌড়াতে গিয়ে খসে পড়ে অপরিচয়ের দেয়াল। এই সান্নিধ্যসুখ অনেকের জীবনেই থেকে যায় লম্বা সময়। দৌড়ের সময় আশপাশের বাড়ির উঠান থেকে অনেকেই করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান।

লম্বা দৌড়ে শরীর যখন মনের কথা শুনতে চায় না, তখন একদম অচেনা কারও কাছ থেকে পাওয়া এইটুকু উৎসাহ রীতিমতো টনিকের কাজ করে। পাঁজরের ভেতর বুনো ঘোড়ার মতো লাফাতে থাকা হৃৎপিণ্ডকে কেয়ার করার ফুরসত তখন কই। সবকিছুর যেমন শেষ আছে, একসময় পথও ফুরোয়।

ভোরের আকাশে তখন হয়তোবা শিশুসূর্যের রাজত্ব। শেষের রেখা ছুঁয়ে অনেকের চোখেই থাকে অসাধ্য সাধনের আনন্দ, নিজেদের সামর্থ্যের পারদটা আরেকটু উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার পুলক। টানা দৌড়ানোর ফলে জীবনীশক্তি খানিকটা নিবু নিবু হলেও ফিনিশ লাইনে পৌঁছালে ঠোঁটে থাকে অমূল্য হাসি। শেষের রেখায় পৌঁছানোর আনন্দের কাছে ম্লান হয়ে যায় পথের শ্রান্তি।

ঢাকা কিংবা বিভাগীয় শহর তো বটেই, দেশের নানা জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ রকম যূথবব্ধ দৌড় এখন সাধারণ চিত্র। আর এসব রানারদের কারণে দেশের বড় একটা অংশের কাছে দৌড় এখন হয়ে গেছে জীবনের অঙ্গ!