০৮:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৯ কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়

  • Sangbad365 Admin
  • সময়ঃ ১২:০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১৬০০২ Time View

২. কাউকে সালাম দেওয়া

নামাজরত অবস্থায় কাউকে আসসালামু আলাইকুম বা অন্য কোনোভাবে সালাম দিলে নামাজ ভেঙে যায় (ইবনুল হুমাম, ফাতহুল কাদির, ১/৪০৫, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৩৯৭ হিজরি)। এটি মূলত মানুষের সঙ্গে কথোপকথনের শামিল।

৩. সালামের উত্তর দেওয়া

কেউ সালাম দিলে মুখে তার উত্তর দিলেও নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নামাজরত অবস্থায় সালাম দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি উত্তর দেননি এবং পরে বুঝিয়ে বলেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২১৬)।

৪. শব্দ করে দুঃখ প্রকাশ করা

নামাজের মধ্যে দুনিয়াবি কোনো দুঃখ বা ব্যথার কারণে যদি ‘উহ’, ‘আহ’ বা ‘তফ’ শব্দ করা হয়, তবে নামাজ ভেঙে যায় (বুরহানুদ্দিন মারগিনানি, আল-হিদায়া, ১/৬৩, দারু ইহয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৫)। তবে যদি জান্নাত বা জাহান্নামের বর্ণনায় আল্লাহ্‌র ভয়ে এমন শব্দ বের হয়, তবে নামাজ ভাঙবে না।

৫. অযথা কাশি দেওয়া

গলায় কফ জমলে বা স্বাভাবিক প্রয়োজনে কাশি দিলে অসুবিধা নেই। কিন্তু অহেতুক বা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শব্দ করে কাশি দিলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায় (আলাউদ্দীন কাসানি, বাদাইউস সানাই, ১/২৩৫, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৩)।

৬. আমল-ই-কাসির বা অতিরিক্ত নড়াচড়া

নামাজের মধ্যে এমন কোনো কাজ করা যা দেখলে দূর থেকে মনে হয় যে ব্যক্তিটি নামাজ পড়ছে না, তাকে আমল-ই-কাসির বলা হয়। এই ধরনের অতিরিক্ত নড়াচড়া নামাজকে বাতিল করে দেয় (ইবনে আবিদিন, রদ্দুল মুহতার, ২/৩৮৫, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৯৯২)।

৭. সুসংবাদ শুনে আলহামদুলিল্লাহ বলা

নামাজে থাকাকালীন বাইরের কোনো ভালো খবর শুনে যদি কেউ ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে উত্তর দেয়, তবে তার নামাজ ভেঙে যাবে। কারণ এটি তখন জিকির না হয়ে কথোপকথনের অংশ হয়ে দাঁড়ায় (হাসান ইবন আম্মার শুরুনবুলালি, নুরুল ইজাহ, পৃষ্ঠা: ৮৪, আল-মাকতাবাতুল আসরিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৫)।

৮. দুঃসংবাদ শুনে ইন্নালিল্লাহ বলা

একইভাবে, কোনো শোকের সংবাদ শুনে নামাজে থাকা অবস্থায় ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলে নামাজ ভেঙে যায়।

৯. আশ্চর্যের কিছু শুনে সুবহানাল্লাহ বলা

নামাজের বাইরের কোনো ঘটনায় আশ্চর্য হয়ে যদি কেউ ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে ফিকহবিদদের মতে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে।

১০. নিজের ইমাম ব্যতীত অন্য কাউকে ‘লোকমা’ দেওয়া

লোকমা মানে ভুল ধরিয়ে দেওয়া। নামাজে নিজের ইমাম কোরআন তিলাওয়াতে ভুল করলে তাকে ধরিয়ে দেওয়া বা লোকমা দেওয়া জায়েজ। কিন্তু অন্য কোনো নামাজির ভুল ধরিয়ে দিলে নামাজ ভেঙে যায় (বুরহানুদ্দিন মারগিনানি, আল-হিদায়া, ১/৬৪, দারু ইহয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৫)।

১১. কোরআন দেখে দেখে পড়া

নামাজে দাঁড়িয়ে সামনে রাখা কোরআন শরিফ বা কোনো কিতাব দেখে দেখে পড়া ইমাম আবু হানিফার মতে নামাজ ভঙ্গের কারণ। কারণ এটি নামাজের বাইরের একটি শিক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়ার মতো মনে হয়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

১৯ কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়

সময়ঃ ১২:০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

২. কাউকে সালাম দেওয়া

নামাজরত অবস্থায় কাউকে আসসালামু আলাইকুম বা অন্য কোনোভাবে সালাম দিলে নামাজ ভেঙে যায় (ইবনুল হুমাম, ফাতহুল কাদির, ১/৪০৫, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৩৯৭ হিজরি)। এটি মূলত মানুষের সঙ্গে কথোপকথনের শামিল।

৩. সালামের উত্তর দেওয়া

কেউ সালাম দিলে মুখে তার উত্তর দিলেও নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নামাজরত অবস্থায় সালাম দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি উত্তর দেননি এবং পরে বুঝিয়ে বলেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২১৬)।

৪. শব্দ করে দুঃখ প্রকাশ করা

নামাজের মধ্যে দুনিয়াবি কোনো দুঃখ বা ব্যথার কারণে যদি ‘উহ’, ‘আহ’ বা ‘তফ’ শব্দ করা হয়, তবে নামাজ ভেঙে যায় (বুরহানুদ্দিন মারগিনানি, আল-হিদায়া, ১/৬৩, দারু ইহয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৫)। তবে যদি জান্নাত বা জাহান্নামের বর্ণনায় আল্লাহ্‌র ভয়ে এমন শব্দ বের হয়, তবে নামাজ ভাঙবে না।

৫. অযথা কাশি দেওয়া

গলায় কফ জমলে বা স্বাভাবিক প্রয়োজনে কাশি দিলে অসুবিধা নেই। কিন্তু অহেতুক বা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শব্দ করে কাশি দিলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায় (আলাউদ্দীন কাসানি, বাদাইউস সানাই, ১/২৩৫, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৩)।

৬. আমল-ই-কাসির বা অতিরিক্ত নড়াচড়া

নামাজের মধ্যে এমন কোনো কাজ করা যা দেখলে দূর থেকে মনে হয় যে ব্যক্তিটি নামাজ পড়ছে না, তাকে আমল-ই-কাসির বলা হয়। এই ধরনের অতিরিক্ত নড়াচড়া নামাজকে বাতিল করে দেয় (ইবনে আবিদিন, রদ্দুল মুহতার, ২/৩৮৫, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৯৯২)।

৭. সুসংবাদ শুনে আলহামদুলিল্লাহ বলা

নামাজে থাকাকালীন বাইরের কোনো ভালো খবর শুনে যদি কেউ ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে উত্তর দেয়, তবে তার নামাজ ভেঙে যাবে। কারণ এটি তখন জিকির না হয়ে কথোপকথনের অংশ হয়ে দাঁড়ায় (হাসান ইবন আম্মার শুরুনবুলালি, নুরুল ইজাহ, পৃষ্ঠা: ৮৪, আল-মাকতাবাতুল আসরিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৫)।

৮. দুঃসংবাদ শুনে ইন্নালিল্লাহ বলা

একইভাবে, কোনো শোকের সংবাদ শুনে নামাজে থাকা অবস্থায় ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করলে নামাজ ভেঙে যায়।

৯. আশ্চর্যের কিছু শুনে সুবহানাল্লাহ বলা

নামাজের বাইরের কোনো ঘটনায় আশ্চর্য হয়ে যদি কেউ ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে ফিকহবিদদের মতে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে।

১০. নিজের ইমাম ব্যতীত অন্য কাউকে ‘লোকমা’ দেওয়া

লোকমা মানে ভুল ধরিয়ে দেওয়া। নামাজে নিজের ইমাম কোরআন তিলাওয়াতে ভুল করলে তাকে ধরিয়ে দেওয়া বা লোকমা দেওয়া জায়েজ। কিন্তু অন্য কোনো নামাজির ভুল ধরিয়ে দিলে নামাজ ভেঙে যায় (বুরহানুদ্দিন মারগিনানি, আল-হিদায়া, ১/৬৪, দারু ইহয়ায়িত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৫)।

১১. কোরআন দেখে দেখে পড়া

নামাজে দাঁড়িয়ে সামনে রাখা কোরআন শরিফ বা কোনো কিতাব দেখে দেখে পড়া ইমাম আবু হানিফার মতে নামাজ ভঙ্গের কারণ। কারণ এটি নামাজের বাইরের একটি শিক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়ার মতো মনে হয়।